সবাই অন্তত নিচের নিবন্ধটি একবার পড়ে দেখুন ....
নিবন্ধকার .... আর কেউ নন, - হিন্দু সংহতির মাননীয় সভাপতি ... স্বয়ং শ্রী তপন ঘোষ মহাশয়।
কতটা প্রজ্ঞা আর দূরদৃষ্টি থাকলে, এমন একটি অনন্য রচনা সম্ভব...?
====================================================
কেন্দ্রে মোদীজী'র উপর ভরসা রাখুনঃ
====================================================
ভারত অনেক কঠিন সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই সমস্যাগুলি তৈরী হয়েছে বহু বহুদিন ধরে। মানে কতদিন? ১৯৪৭ সাল থেকে? না। ৭১১ সাল থেকে (সিন্ধের উপর মোহম্মদ বিন কাশিমের আক্রমণ)। হয়ত বা তারও আগে থেকে।
১৯৯৮ সালে কেন্দ্রে বাজপেয়ী-র নেতৃত্বাধীন সরকার গঠিত হলে আশা হয়েছিল, এই সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা শুরু হবে। হয়ত শুরু হয়েওছিল। কিনতু, (১) বাজপেয়ীজি ২০০৩ সাল থেকেই স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলছিলেন। (২) শারীরিকভাবেও তিনি অনেকটাই অচল হয়ে গিয়েছিলেন। এবং সর্বোপরি (৩) তাঁর নেহেরুবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর জন্য আমরা তাঁর উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছিলাম। আস্থা যে শুধু আমরাই হারাইনি, আরো বহু মানুষ হারিয়ে ফেলেছিলেন, তা তো ২০০৪ সালের নির্বাচনেই বোঝা গেল।
তারপরের ১০ বছর আবার ঘোর অন্ধকার। রোমান খ্ৰীষ্টানের শাসন এক নপুংসক ক্রীতদাসের দ্বারা চেপে বসেছিল দেশের উপরে।
তারপর এল মোদীজির শাসন। জাগ্রত সচেতন হিন্দুদের তীব্র আকাঙ্খা, প্রার্থনা, ভগবানের আশীর্বাদ ও মোদীজির প্রচন্ড সংকল্পশক্তির দ্বারাই এটা সম্ভব হয়েছে। মানুষ ও আমরা বিরাট আশায় বুক বেঁধেছি। এইবার সব সমস্যার সমাধান হবে।
কিনতু,..............
১) সমস্যার গভীরতা কতটা - সে বিষয়ে এক একজন মানুষের ধারণা এক একরকম। অর্থাৎ, আলাদা, আলাদা।
২) হিন্দুবিরোধী শক্তি কত প্রবল, সে বিষয়েও মানুষের ধারণা আলাদা আলাদা।
৩) মানুষের ধৈর্যধারণের ক্ষমতাও একরকম নয়।
সুতরাং, ....
আচ্ছা, সমস্যা কোনগুলি? প্রধান সমস্যা কোনগুলি? কোন সমস্যা আগে সমাধান করা দরকার?
- আশির দশক থেকেই হিন্দু সংগঠনগুলো তিনটি সমস্যাকে সকলের সামনে তুলে ধরেছিল। এই তিনটি সমস্যাই সমস্ত সমস্যার মূল বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। তার ফলে এই তিনটি সমস্যা সমগ্র হিন্দু সমাজের কাছে সমস্ত সমস্যার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
এগুলি ছিল - রামমন্দির তৈরী করা, অভিন্ন নাগরিক আইন তৈরী করা এবং কাশ্মীর থেকে ৩৭০ নং ধারা বাতিল করা।
এই তিনটির দাবীতেই দীর্ঘদিন জোরালো আন্দোলন করা হয়েছে। ফলে ঠিক বাজপেয়ী সরকারের মত মোদীজির সরকারের কাছেও মানুষের প্রত্যাশা যে তিনি এই তিনটি সমস্যাকে অগ্রাধিকার দেবেন। এবং দ্রুত সমাধানের পথে এগিয়ে যাবেন।
কিনতু আপাত দৃষ্টিতে তা দেখা যাচ্ছে না। তাই অনেকে অধৈর্য হয়ে পড়ছেন। মোদীজিকেও বাজপেয়ীর মতই মনে করছেন। অনেকে মনে করছেন, মোদীজিও হিন্দুদেরকে ধোঁকা দিলেন।
কিনতু আমি তা মনে করছি না।
কেন মনে করছি না?
- কারণ, সমস্যার গভীরতা আমি জানি। শত্রূর শক্তির প্রবলতা, প্রচন্ডতা আমি জানি।
আরো জানি, ওই তিনটি প্রতীকী সমস্যায় হাত দেওয়ার আগে অন্য অনেক সমস্যা সমাধান করে তবেই ওগুলোতে হাত দেওয়া যাবে। রাবণ বধের আগে রামকে তাড়কা, খর, দূষণ, মারীচ এবং আরো অনেক রাক্ষস বধ করতে হয়েছে। সূর্পণখার নাক কাটতে হয়েছে। এযুগের সুর্পনখা হল 'মিডিয়া'। আর পূতনা হল মাদার টেরেসা ও খ্রীস্টান পাদ্রী।
হিন্দুবিরোধী সেকুলার মিডিয়া, শিক্ষাবিদ, ঐতিহাসিক, নৃতত্ত্ববিদ, অর্থনীতিবিদ, সমাজতাত্ত্বিক, বামপন্থী, চীনপন্থী, পাকপন্থী, আমেরিকাপন্থী, আরবপন্থী, প্রচন্ড শক্তিশালী এনজিও - এগুলোকে নিষ্ক্রিয় বা শক্তিহীন বা দুর্বল না করে কোন বড় সমস্যায় হাত দেওয়া যাবে না। আর এগুলোকে শক্তিহীন করতে হলে প্রথমতঃ, (১) একসঙ্গে সবগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করা হবে চরম বোকামি, (২) এদের সঙ্গেই লড়াই করছি - এটা না দেখিয়ে লড়তে হবে। অর্থাৎ গুপ্ত লড়াই করতে হবে।
বিজাপুর থেকে আফজল খাঁ এসে যখন শিবাজীর রাজ্য আক্রমণ করল, শিবাজী পালিয়ে গিয়ে পাহাড়ের উপর প্রতাপগড় দুর্গে আশ্রয় নিলেন, আফজল খাঁ রাজ্য ছারখার করে দিতে লাগল, এমনকি শিবাজীর ইষ্টদেবী তুলজাপুর ভবানী মন্দির ভাঙলো, তখন পুণের মারাঠী হিন্দুরা শিবাজীকে যে পরিমাণ গালাগালি করেছিল, তার দশ ভাগের একভাগ গালাগালিও এখনো মোদীকে শুনতে হয়নি। মোদীজি ২০১৪-র পর থেকে এখনো পর্যন্ত যত গালাগালি শুনেছেন, তিনি বোধহয় তার থেকে আরো দশগুণ বেশি গালাগালি ও সমালোচনা শুনতে প্রস্তূত আছেন। কারণ, শিবাজীর জীবনকাহিনী তিনি পড়েছেন। তার থেকে শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।
আর একটা কথা। 'মন্ত্রগুপ্তি' কথাটা আপনারা শোনেননি? গুরু শিষ্যকে যে মন্ত্র দীক্ষা দেন, সে মন্ত্র তো শিষ্য গোপন রাখে! আচ্ছা, মন্ত্র গোপন রাখা যায়, বিশেষ পরিস্থিতিতে গুরুর নাম গোপন রাখা যায় না? একজন শিষ্যের ব্যক্তিগত জীবনে সমস্যা যত বড়, আমাদের রাষ্ট্রের জীবনে সমস্যা কি তার থেকেও হাজার লক্ষ গুন বেশি নয়? তাহলে এটা কি খুব অসম্ভব যে, মোদীজি গান্ধীভক্তি দেখিয়ে তাঁর আসল গুরুর নামটা গোপন রাখছেন! কৃষ্ণকে তো কংসের হাত থেকে বাঁচার জন্য ১১ বছর পর্যন্ত বাপের নামও গোপন রাখতে হয়েছিল! আর মোদীজি তো শুধু গুরুর নামটা গোপন রাখছেন! খুব অসম্ভব অবাস্তব মনে হচ্ছে কি? আচ্ছা, ২০০১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত মোদীজি তো গুজরাটের-ই মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন! গান্ধীজির গুজরাট। সেই ১৪ বছরে তিনি গুজরাটে থেকেও তেমন কিছু গান্ধীভক্তি দেখাননি। আর দিল্লীতে এসে এতবড় গান্ধীভক্ত হয়ে গেলেন? এত পরিণত বয়সে কি কেউ নতুন গুরু ধরে? একটু তলিয়ে ভাবুন। মোদী - সমস্যার গভীরতা - শিবাজীর শিক্ষা - গান্ধীভক্তি প্রদর্শন - একটু তলিয়ে ভাবার চেষ্টা করুন।
এর থেকে বেশি ব্যাখ্যা করার আমার ক্ষমতাও নেই, ধৈর্য্য নেই। যদি বা আরো ধৈর্য নিয়ে আরো খুলে বলি, তা কি আমাদের উদ্দেশ্যকেই ব্যর্থ করে দেবে না? Will not our ultimate purpose be defeated? কিনতু 'বড় হিন্দু'রা আমাকে সেটা করতেই বাধ্য করতে চাইছেন। দেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে। এই যেটুকু লিখলাম, এতেই অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। কিনতু লিখতে হল। কারণ, শিবাজীকে জবাবদিহি করতে হলেও ভোট চাইতে হয়নি। কিনতু মোদীজিকে ভোট চাইতে হবে ২০১৯-এ।
তাই, সকলকে অনুরোধ করব কয়েকটা কথা বুঝতে -
(১) মোদীজি বাজপেয়ী নন। [মনে রাখবেন, ২০০২-এর গুজরাট দাঙ্গার পর মিত্রপক্ষ থেকে মোদীজিকে প্রকাশ্যে অপমান করেছিলেন একমাত্র বাজপেয়ীজি। আর কেউ নয়।]
(২) সমস্যার গভীরতার, বিশালতা ও প্রচন্ডতার এক শতাংশও আমরা অনুধাবন করতে পারব না।
(৩) কৌশল বা স্ট্র্যাটেজি যদি সাধারণ মানুষ সহজেই বুঝে যায়, তাহলে তা আর স্ট্র্যাটেজি থাকে না। সাধারণ হিন্দুকে ধৈর্য্য ধরতে ও বিশ্বাস রাখতে বলুন।
(৪) মোদীজিকে অনেক কাজ করতে হবে। কিনতু সব থেকে আগে করতে হবে, ২০১৯-শে জেতার ব্যবস্থা।
(৫) জেতার উপায় আপনার আমার থেকে মোদী -অমিত শাহ একটু বেশিই জানেন।
(৬) বাজপেয়ীজি কি বোকা ছিলেন? না। কিনতু তিনি জানতেন, ২০০৪-এ দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মত শারীরিক অবস্থায় তিনি থাকবেননা। তাই দলকে জেতানোর থেকেও ইতিহাসে নিজের নাম লিপিবদ্ধ করার জন্য তিনি বেশি সচেষ্ট ছিলেন।
(৭) TINA ফ্যাক্টরের জন্য নয়, ইতিবাচকভাবে positive hope নিয়ে মোদীজির উপর ভরসা রাখুন।
হিন্দুর বড় দুর্দিন। শুধু "জয় শ্রীরাম" স্লোগান দিয়ে হিন্দু বাঁচবেনা। বাকীটা.....................
নিবন্ধকার .... আর কেউ নন, - হিন্দু সংহতির মাননীয় সভাপতি ... স্বয়ং শ্রী তপন ঘোষ মহাশয়।
কতটা প্রজ্ঞা আর দূরদৃষ্টি থাকলে, এমন একটি অনন্য রচনা সম্ভব...?
====================================================
কেন্দ্রে মোদীজী'র উপর ভরসা রাখুনঃ
====================================================
ভারত অনেক কঠিন সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই সমস্যাগুলি তৈরী হয়েছে বহু বহুদিন ধরে। মানে কতদিন? ১৯৪৭ সাল থেকে? না। ৭১১ সাল থেকে (সিন্ধের উপর মোহম্মদ বিন কাশিমের আক্রমণ)। হয়ত বা তারও আগে থেকে।
১৯৯৮ সালে কেন্দ্রে বাজপেয়ী-র নেতৃত্বাধীন সরকার গঠিত হলে আশা হয়েছিল, এই সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা শুরু হবে। হয়ত শুরু হয়েওছিল। কিনতু, (১) বাজপেয়ীজি ২০০৩ সাল থেকেই স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলছিলেন। (২) শারীরিকভাবেও তিনি অনেকটাই অচল হয়ে গিয়েছিলেন। এবং সর্বোপরি (৩) তাঁর নেহেরুবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর জন্য আমরা তাঁর উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছিলাম। আস্থা যে শুধু আমরাই হারাইনি, আরো বহু মানুষ হারিয়ে ফেলেছিলেন, তা তো ২০০৪ সালের নির্বাচনেই বোঝা গেল।
তারপরের ১০ বছর আবার ঘোর অন্ধকার। রোমান খ্ৰীষ্টানের শাসন এক নপুংসক ক্রীতদাসের দ্বারা চেপে বসেছিল দেশের উপরে।
তারপর এল মোদীজির শাসন। জাগ্রত সচেতন হিন্দুদের তীব্র আকাঙ্খা, প্রার্থনা, ভগবানের আশীর্বাদ ও মোদীজির প্রচন্ড সংকল্পশক্তির দ্বারাই এটা সম্ভব হয়েছে। মানুষ ও আমরা বিরাট আশায় বুক বেঁধেছি। এইবার সব সমস্যার সমাধান হবে।
কিনতু,..............
১) সমস্যার গভীরতা কতটা - সে বিষয়ে এক একজন মানুষের ধারণা এক একরকম। অর্থাৎ, আলাদা, আলাদা।
২) হিন্দুবিরোধী শক্তি কত প্রবল, সে বিষয়েও মানুষের ধারণা আলাদা আলাদা।
৩) মানুষের ধৈর্যধারণের ক্ষমতাও একরকম নয়।
সুতরাং, ....
আচ্ছা, সমস্যা কোনগুলি? প্রধান সমস্যা কোনগুলি? কোন সমস্যা আগে সমাধান করা দরকার?
- আশির দশক থেকেই হিন্দু সংগঠনগুলো তিনটি সমস্যাকে সকলের সামনে তুলে ধরেছিল। এই তিনটি সমস্যাই সমস্ত সমস্যার মূল বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। তার ফলে এই তিনটি সমস্যা সমগ্র হিন্দু সমাজের কাছে সমস্ত সমস্যার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
এগুলি ছিল - রামমন্দির তৈরী করা, অভিন্ন নাগরিক আইন তৈরী করা এবং কাশ্মীর থেকে ৩৭০ নং ধারা বাতিল করা।
এই তিনটির দাবীতেই দীর্ঘদিন জোরালো আন্দোলন করা হয়েছে। ফলে ঠিক বাজপেয়ী সরকারের মত মোদীজির সরকারের কাছেও মানুষের প্রত্যাশা যে তিনি এই তিনটি সমস্যাকে অগ্রাধিকার দেবেন। এবং দ্রুত সমাধানের পথে এগিয়ে যাবেন।
কিনতু আপাত দৃষ্টিতে তা দেখা যাচ্ছে না। তাই অনেকে অধৈর্য হয়ে পড়ছেন। মোদীজিকেও বাজপেয়ীর মতই মনে করছেন। অনেকে মনে করছেন, মোদীজিও হিন্দুদেরকে ধোঁকা দিলেন।
কিনতু আমি তা মনে করছি না।
কেন মনে করছি না?
- কারণ, সমস্যার গভীরতা আমি জানি। শত্রূর শক্তির প্রবলতা, প্রচন্ডতা আমি জানি।
আরো জানি, ওই তিনটি প্রতীকী সমস্যায় হাত দেওয়ার আগে অন্য অনেক সমস্যা সমাধান করে তবেই ওগুলোতে হাত দেওয়া যাবে। রাবণ বধের আগে রামকে তাড়কা, খর, দূষণ, মারীচ এবং আরো অনেক রাক্ষস বধ করতে হয়েছে। সূর্পণখার নাক কাটতে হয়েছে। এযুগের সুর্পনখা হল 'মিডিয়া'। আর পূতনা হল মাদার টেরেসা ও খ্রীস্টান পাদ্রী।
হিন্দুবিরোধী সেকুলার মিডিয়া, শিক্ষাবিদ, ঐতিহাসিক, নৃতত্ত্ববিদ, অর্থনীতিবিদ, সমাজতাত্ত্বিক, বামপন্থী, চীনপন্থী, পাকপন্থী, আমেরিকাপন্থী, আরবপন্থী, প্রচন্ড শক্তিশালী এনজিও - এগুলোকে নিষ্ক্রিয় বা শক্তিহীন বা দুর্বল না করে কোন বড় সমস্যায় হাত দেওয়া যাবে না। আর এগুলোকে শক্তিহীন করতে হলে প্রথমতঃ, (১) একসঙ্গে সবগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করা হবে চরম বোকামি, (২) এদের সঙ্গেই লড়াই করছি - এটা না দেখিয়ে লড়তে হবে। অর্থাৎ গুপ্ত লড়াই করতে হবে।
বিজাপুর থেকে আফজল খাঁ এসে যখন শিবাজীর রাজ্য আক্রমণ করল, শিবাজী পালিয়ে গিয়ে পাহাড়ের উপর প্রতাপগড় দুর্গে আশ্রয় নিলেন, আফজল খাঁ রাজ্য ছারখার করে দিতে লাগল, এমনকি শিবাজীর ইষ্টদেবী তুলজাপুর ভবানী মন্দির ভাঙলো, তখন পুণের মারাঠী হিন্দুরা শিবাজীকে যে পরিমাণ গালাগালি করেছিল, তার দশ ভাগের একভাগ গালাগালিও এখনো মোদীকে শুনতে হয়নি। মোদীজি ২০১৪-র পর থেকে এখনো পর্যন্ত যত গালাগালি শুনেছেন, তিনি বোধহয় তার থেকে আরো দশগুণ বেশি গালাগালি ও সমালোচনা শুনতে প্রস্তূত আছেন। কারণ, শিবাজীর জীবনকাহিনী তিনি পড়েছেন। তার থেকে শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।
আর একটা কথা। 'মন্ত্রগুপ্তি' কথাটা আপনারা শোনেননি? গুরু শিষ্যকে যে মন্ত্র দীক্ষা দেন, সে মন্ত্র তো শিষ্য গোপন রাখে! আচ্ছা, মন্ত্র গোপন রাখা যায়, বিশেষ পরিস্থিতিতে গুরুর নাম গোপন রাখা যায় না? একজন শিষ্যের ব্যক্তিগত জীবনে সমস্যা যত বড়, আমাদের রাষ্ট্রের জীবনে সমস্যা কি তার থেকেও হাজার লক্ষ গুন বেশি নয়? তাহলে এটা কি খুব অসম্ভব যে, মোদীজি গান্ধীভক্তি দেখিয়ে তাঁর আসল গুরুর নামটা গোপন রাখছেন! কৃষ্ণকে তো কংসের হাত থেকে বাঁচার জন্য ১১ বছর পর্যন্ত বাপের নামও গোপন রাখতে হয়েছিল! আর মোদীজি তো শুধু গুরুর নামটা গোপন রাখছেন! খুব অসম্ভব অবাস্তব মনে হচ্ছে কি? আচ্ছা, ২০০১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত মোদীজি তো গুজরাটের-ই মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন! গান্ধীজির গুজরাট। সেই ১৪ বছরে তিনি গুজরাটে থেকেও তেমন কিছু গান্ধীভক্তি দেখাননি। আর দিল্লীতে এসে এতবড় গান্ধীভক্ত হয়ে গেলেন? এত পরিণত বয়সে কি কেউ নতুন গুরু ধরে? একটু তলিয়ে ভাবুন। মোদী - সমস্যার গভীরতা - শিবাজীর শিক্ষা - গান্ধীভক্তি প্রদর্শন - একটু তলিয়ে ভাবার চেষ্টা করুন।
এর থেকে বেশি ব্যাখ্যা করার আমার ক্ষমতাও নেই, ধৈর্য্য নেই। যদি বা আরো ধৈর্য নিয়ে আরো খুলে বলি, তা কি আমাদের উদ্দেশ্যকেই ব্যর্থ করে দেবে না? Will not our ultimate purpose be defeated? কিনতু 'বড় হিন্দু'রা আমাকে সেটা করতেই বাধ্য করতে চাইছেন। দেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে। এই যেটুকু লিখলাম, এতেই অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। কিনতু লিখতে হল। কারণ, শিবাজীকে জবাবদিহি করতে হলেও ভোট চাইতে হয়নি। কিনতু মোদীজিকে ভোট চাইতে হবে ২০১৯-এ।
তাই, সকলকে অনুরোধ করব কয়েকটা কথা বুঝতে -
(১) মোদীজি বাজপেয়ী নন। [মনে রাখবেন, ২০০২-এর গুজরাট দাঙ্গার পর মিত্রপক্ষ থেকে মোদীজিকে প্রকাশ্যে অপমান করেছিলেন একমাত্র বাজপেয়ীজি। আর কেউ নয়।]
(২) সমস্যার গভীরতার, বিশালতা ও প্রচন্ডতার এক শতাংশও আমরা অনুধাবন করতে পারব না।
(৩) কৌশল বা স্ট্র্যাটেজি যদি সাধারণ মানুষ সহজেই বুঝে যায়, তাহলে তা আর স্ট্র্যাটেজি থাকে না। সাধারণ হিন্দুকে ধৈর্য্য ধরতে ও বিশ্বাস রাখতে বলুন।
(৪) মোদীজিকে অনেক কাজ করতে হবে। কিনতু সব থেকে আগে করতে হবে, ২০১৯-শে জেতার ব্যবস্থা।
(৫) জেতার উপায় আপনার আমার থেকে মোদী -অমিত শাহ একটু বেশিই জানেন।
(৬) বাজপেয়ীজি কি বোকা ছিলেন? না। কিনতু তিনি জানতেন, ২০০৪-এ দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মত শারীরিক অবস্থায় তিনি থাকবেননা। তাই দলকে জেতানোর থেকেও ইতিহাসে নিজের নাম লিপিবদ্ধ করার জন্য তিনি বেশি সচেষ্ট ছিলেন।
(৭) TINA ফ্যাক্টরের জন্য নয়, ইতিবাচকভাবে positive hope নিয়ে মোদীজির উপর ভরসা রাখুন।
হিন্দুর বড় দুর্দিন। শুধু "জয় শ্রীরাম" স্লোগান দিয়ে হিন্দু বাঁচবেনা। বাকীটা.....................
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন