প্রশ্নঃ--মহালয়া মানে কি এবং কেনই বাএই মহালয়া আপনারা কি জানেন ?????.উত্তরঃ-সবাই নিশ্চই জানেন মহালয়া মানে দূর্গাপূজার দিন গোনা , মহালয়ার ৬দিন পর মহাসপ্তমী,তাই দেবিকে আমন্ত্রন জানানো ইত্যাদি।মহালয়ার তার চেয়েবড় গুরুত্ব আছে, সেটা কি আপনারা কেউ জানেন???.মহালয়া মানে পিতৃপক্ষের শেষ আরদেবীপক্ষের শুরু । হিন্দুধর্ম মতে, পিতৃপক্ষ (সংস্কৃত: पितृ पक्ष) পূর্বপূরুষের তর্পণাদির জন্য প্রশস্ত এক বিশেষ পক্ষ। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, জীবিত ব্যক্তির পূর্বের তিন পুরুষ পর্যন্ত পিতৃলোকে বাস করেন। এই লোক স্বর্গ ও মর্ত্যের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত।পিতৃলোকের শাসক মৃত্যুদেবতা যম। তিনিই সদ্য মৃত ব্যক্তির আত্মাকে মর্ত্য থেকেপিতৃলোকে নিয়ে যান। পরবর্তী প্রজন্মেরএকজনেরমৃত্যু হলে পূর্ববর্তী প্রজন্মেরএকজন পিতৃলোক ছেড়ে স্বর্গে গমন করেন এবং পরমাত্মায় (ঈশ্বর) লীন হন এবং এইপ্রক্রিয়ায় তিনি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের উর্ধ্বে উঠে যান। এই কারণে, কেবলমাত্র জীবিত ব্যক্তির পূর্ববর্তী তিন প্রজন্মেরই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানহয়ে থাকে এবং এই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যম একটিগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।.ত্রেতা যুগে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র অকালে দেবীকে আরাধনা করেছিলেন লঙ্কা জয় করে সীতাকে উদ্ধারের জন্য। আসল দূর্গা পূজা হলো বসন্তে , সেটাকে বাসন্তী পূজা বলা হয় । শ্রীরামচন্দ্র অকালে-অসময়ে পূজা করেছিলেন বলে এই শরতের পূজাকে দেবীর অকাল-বোধন বলা হয় ।.সনাতন ধর্মে কোন শুভ কাজ করতে গেলে , বিবাহ করতে গেলে প্রয়াতদের উদ্দেশ্যেঅথবা যাদের পিতা-মাতা নেই তাদের পিতা-মাতার জন্য, সাথে সমগ্র জীব-জগতের জন্য তর্পণ করতে হয়, কার্যাদি- অঞ্জলি প্রদান করতে হয় । তর্পণ মানেখুশি করা । ভগবান শ্রীরাম লঙ্কা বিজয়ের আগে এদিনে এমনই করেছিলেন । সেই অনুসারে এই মহালয়া তিথিতে যারা পিতৃ-মাতৃহীন তারা তাদের পূর্বপূরূষের স্মরন করেন,পূর্বপূরুষের আত্নার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি প্রদান করেন। সনাতন ধর্ম অনুসারে এই দিনে প্রয়াত আত্নাদের মর্তে পাঠিয়ে দেয়া হয়। প্রয়াত আত্নার যে সমাবেশ হয় তাহাকে মহালয় বলা হয়। মহালয় থেকে মহালয়া।.পিতৃপক্ষেরও এটি শেষদিন। পৌরাণিক মতে, মহাভারতের মহাযুদ্ধে কর্ণ যখন মারা যান, তখন তার আত্মাকে খাদ্য হিসেবে গয়না উৎসর্গ করা হয় । বিস্মিত,বিমূঢ় কর্ণ এর কারণ জানতে চান দেবরাজ ইন্দ্রের কাছে । ইন্দ্র জানান যে,কর্ণ তার জিবদ্দশায় কখনও পূর্বপুরুষের প্রতি খাবার,জল অর্পন করেননি, বরং তার দানের বিষয় ছিল শুধুই সোনা। আর সেই কর্মফলই তার প্রতি ফিরে এসেছে। কর্ণ তা জানতেন নাবলে তাকে ১৬ দিনের জন্য পৃথিবীতে ফিরে আসতে সুযোগ দেওয়া হয়, যাতে তিনিপিতৃপুরুষকে জল এবং খাবার অর্পন করতে পারেন । এই সময়কালই পিতৃপক্ষ হিসাবেপরিচিত হয় । মহালয়া পক্ষের পনেরোটি তিথির নাম হল প্রতিপদ, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী, একাদশী, দ্বাদশী, ত্রয়োদশী,চতুর্দশী ও অমাবস্যা। মহালয়া মানেই আর ৬ দিনের প্রতীহ্মা মায়ের পুজার।এই দিনেই দেবীর চহ্মুদান করা হয় । মহিষাসুরমর্দিনীদেবী দূর্গা সমস্ত অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীক রূপে পূজিত। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস ।.পুরাণ মতে, মহালয়ার দিনে, দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। ব্রম্মার বরঅনুযায়ী কোন মানুষ বা দেবতা কখনও মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবেনা। ফলতঅসীম হ্মমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চায় । ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব ত্রয়ী সন্মিলিত ভাবে “মহামায়া” এর রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন এবং দেবতাদের দশটি অস্ত্রে সুসজ্জিত সিংহবাহিনী দেবী দূর্গা নয় দিন ব্যাপি যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও হত্যা করলেন ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন