শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

|| ৪।১০
যাহারা চিত্তসংযত এবং ঈশ্বরপরায়ণ, তাহারাই জ্ঞানের দ্বারা পূত হইয়া তাঁহাকে পায়, আসল কথা, কৃষ্ণোক্ত ধর্ম্মের এমন মর্ম্ম নহে যে, জ্ঞানের দ্বারাই সাধন সম্পূর্ণ হয়। জ্ঞান ও কর্ম্ম উভয়ের সংযোগ চাই।* কেবল কর্ম্মে হইবে না, কেবল জ্ঞানেও নহে। কর্ম্মেই আবার জ্ঞানের সাধন। কর্ম্মের দ্বারা জ্ঞান লাভ হয়। ভগবান্ বলিতেছেন,-
আরুরুক্ষোর্ম্মুনের্যোগং কর্ম্ম কারণমুচ্যতে। ৬।৩
যিনি জ্ঞানযোগে আরোহণেচ্ছু, কর্ম্মই তাঁহার তদারোহণের কারণ বলিয়া কথিত হয়। অতএব কর্ম্মানুষ্ঠানের দ্বারা জ্ঞান লাভ করিতে হইবে। এখানে ভগবদ্বাক্যের অর্থ এই যে, কর্ম্মযোগ ভিন্ন চিত্তশুদ্ধি জন্মে না। চিত্তশুদ্ধি ভিন্ন জ্ঞানযোগে পৌঁছান যায় না।
*------ তবে কি কর্ম্মের দ্বারা জ্ঞান জন্মিলে কর্ম্ম ত্যাগ করিতে হইবে?
*---- উভয়েরই সংযোগ ও সামঞ্জস্য চাই।
|| ৪।৪১
হে ধনঞ্জয়! কর্ম্মযোগের দ্বারা যে ব্যক্তি সংন্যস্তকর্ম্ম এবং জ্ঞানের দ্বারা যার সংশয় ছিন্ন হইয়াছে, সেই আত্মবান্কে কর্ম্মসকল বদ্ধ করিতে পারে না।
তবেই চাই (১) কর্ম্মের সংন্যাস বা ঈশ্বরার্পণ এবং (২) জ্ঞানের দ্বারা সংশয়চ্ছেদন। এইরূপে কর্ম্মবাদের, ও জ্ঞানবাদের বিবাদ মিটিল। ধর্ম্ম সম্পূর্ণ হইল। এইরূপে ধর্ম্ম প্রণেতৃ শ্রেষ্ঠ, ভূতলে মহা মহিমাময় এই নূতন ধর্ম্ম প্রচারিত করিলেন। কর্ম্ম ঈশ্বরে অর্পণ কর; কর্ম্মের দ্বারা জ্ঞান লাভ করিয়া পরমার্থতত্ত্বে সংশয় ছেদন কর।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন