বেদ সম্বন্ধে সম্পূর্নই অজ্ঞ জাকির নায়েক দাবী করেছে যে বেদ এ ‘আল্লাহ’ শব্দটি আছে।তাহলে পরোক্ষভাবে সে স্বীকার করে নিল যে দেবভাষা সংস্কৃত সকল ভাষার আদি এবং আরবি ভাষারও উত্পত্তি ওই সংস্কৃত ভাষা থেকেই!
মূল আলোচনা শুরুর পূর্বে পাঠকদের স্মরন করিয়ে দেই আরবীতে ‘আল্লাহ’ শব্দটি দুইটি অংশ ‘Al'(The) এবং ‘Ilah'(Subject of worship) নিয়ে গঠিত।
মূল আলোচনা শুরুর পূর্বে পাঠকদের স্মরন করিয়ে দেই আরবীতে ‘আল্লাহ’ শব্দটি দুইটি অংশ ‘Al'(The) এবং ‘Ilah'(Subject of worship) নিয়ে গঠিত।
ঋগবেদ এ ইলা এবং অলা নামক দুটি শব্দ আছে।জাকির যে মন্ত্রেই এই শব্দদুটো পাচ্ছে সেখানেই ইসলামিক তাকিয়ায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রলাপ বকছে যে সঠিকভাবে উচ্চারন করলে তা নাকি আল্লাহ হয়!(নতুন সংস্কৃত উচ্চারন পদ্ধতি আবিস্কার)।আরো মজার বিষয় হল ইলা এবং অলা দুটি আলাদা শব্দ ই কিভাবে একটি নির্দিষ্ট শব্দ(আল্লাহ) নির্দেশ করে?
ভন্ড জাকিরের দাবী(অপ্রকৃতিস্থের প্রলাপ) অনুযায়ী ঋগবেদ ২.১.১১,৩.৩০.১০,৯.৬৭.৩০,১.১৩.৩ এই চারটি মন্ত্রে ‘আল্লাহ’ শব্দটি রয়েছে।মন্ত্রগুলোর সরলার্থ সহ দেখে নেয়া যাক-
অলাত্নো বল ইন্দ্র ব্রজো গোঃ পুরা হন্তোর্ভয়োমানো
ব্যয়ার।
সুঘান পথো অক্ষণোন নিরজে গোঃ পরাবন বাণীঃ পুরুহূতং ধমন্তী।।
(ঋগবেদ ৩.৩০.১০)
ব্যয়ার।
সুঘান পথো অক্ষণোন নিরজে গোঃ পরাবন বাণীঃ পুরুহূতং ধমন্তী।।
(ঋগবেদ ৩.৩০.১০)
অনুবাদ-হে সমস্ত ইন্দ্রিয়ের চালনাকারী,শান্তিপ্রিয় ব্যক্তিদের বিঘ্ন সৃষ্টিকারীরা অবশ্যই তোমার নিকট শাস্তি প্রাপ্ত হয়।সত্ ও সাধুদের জন্য তুমি পথ করেছ সুপ্রশস্ত।
স্পষ্টতই যেহেতু সুক্তটি ইন্দ্রের উদ্দেশ্যে সেহেতু অলা এখানে ইন্দ্রের নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
ইলা সরস্বতী মহী তিস্রো দেবির্ময়োভুবঃ।
বহিঃ সীদংত্বস্রিধ।।
(ঋগবেদ ১.১৩.৯)
বহিঃ সীদংত্বস্রিধ।।
(ঋগবেদ ১.১৩.৯)
অনুবাদ-মাতৃভাষা ,মাতৃসভ্যতা ও মাতৃভূমি(ইলা) এইতিন দেবী;তারা যেন কল্যানময়রুপে অন্তঃকরনে অবস্থান নেয় অনন্তকাল।
এখানে ইলা মাতৃভূমি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
ত্বমগ্নে অদিতির্দেব দাসুসে ত্বং হোত্রা ভারতী বর্ধসেঘিরা।
ত্বমিলা ষতহিমাসি দক্ষসি ত্বং বর্ত্রহা বসুপতে সরস্বতী।।
(ঋগবেদ ২.১.১১)
ত্বমিলা ষতহিমাসি দক্ষসি ত্বং বর্ত্রহা বসুপতে সরস্বতী।।
(ঋগবেদ ২.১.১১)
অনুবাদ-হে প্রকাশমান পরমাত্মা,সকলের আশ্রয়দাতা,আমাদের এই স্তব গ্রহন কর।তুমি এই বর্নিল ঋতুময় মাতৃভূমিকে সম্পদশালী কর,নাশ কর অসত্ এর।
এখানে ত্বম-ইলা(তুমি ইলা) অর্থাত্ ইন্দ্রের অপর একটি নাম হিসেবে ইলা ব্যবহৃত হয়েছে।
অলায়স্য পরাশুরননশ্য ত্বম পবস্ব দেব সোম।
অখুঃ চিদেব দেব সোম।।
(ঋগবেদ ৯.৬৭.৩০)
অখুঃ চিদেব দেব সোম।।
(ঋগবেদ ৯.৬৭.৩০)
অনুবাদ– হে মঙ্গলদায়ক,ঐশ্বর্যশালী পরমেশ্বর,তুমি সাধুলোকের শত্রুদের ধ্বংস কর,অসত্ এর বিনাশ কর।
এখানে অলা বলতে সোমকে নির্দেশ করা হচ্ছে।
এখানে অলা বলতে সোমকে নির্দেশ করা হচ্ছে।
জাকির নায়েকের মতে প্রতিটি সংস্কৃত অভিধান এ ই আল্লাহ শব্দটি আছে এবং এর অর্থ হিসেবে ঈশ্বর দেয়া আছে।সবচেয়ে বিখ্যাত সংস্কৃত অভিধান যা Dr. Monier Williams কর্তৃক লিখিত (A Sanskrit-English Dictionary, Motilal Benarasidass, Delhi,1981) এ আল্লাহ বলে কোন শব্দ নেই।যে কাছাকাছি শব্দগুলো সেখানে আছে তা হল অলা যার অর্থ সেখানে দেয়া ‘কাঁকড়াবিছের লেজের হুল”, অলাত যার অর্থ দেয়া আছে “কয়লা” এবং আল যার অর্থ দেয়া হয়েছে “বিষাক্ত পোকা থেকে নির্গত তরল বিষ।”
অন্যতম বিখ্যাত সংস্কৃত অভিধান (The Student’s Sanskrit-English Dictionary by Vaman Shivaram Apte, Motilal Benarasidass, Delhi, 2005) এ একটি শব্দ আছে যা হল অল্লা যার অর্থ দেয়া হয়েছে “মা”
সুতরাং ইসলামিক অপপ্রচারকদের থেকে সতর্ক থাকুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন